আজিজুর রহমান জয়, বিশেষ প্রতিবেদক
গত ২৩ জুন ২০২৫ ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকায় “আ.লীগ-জাপা, গণঅধিকারের নেতাকর্মী দিয়ে এনসিপির কমিটি” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যেহেতু আমাদের নবগঠিত দল এনসিপি ও এর জেলা সমন্বয় কমিটি নিয়ে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে এবং সংবাদে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য পরিবেশিত হয়েছে, তাই আমরা এ সংবাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, “গণঅধিকার পরিষদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা মাহবুবুল বারী চৌধুরী মুবিনকে করা হয়েছে যুগ্ম সমন্বয়কারী।” প্রকৃতপক্ষে মাহবুবুল বারী চৌধুরী মুবিন গণঅধিকার পরিষদ থেকে যথানিয়মে পদত্যাগ করে এসসিপিতে যোগদান করেছেন। এছাড়া তিনি গণঅধিকার পরিষদে যুক্ত থাকার সময়ে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এবং হবিগঞ্জে ও ঢাকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এরপর উল্লেখ করা হয়েছে “কমিটিতে সদস্য হয়েছেন লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামাল আহমেদ। তিনি ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে উপজেলার করাব ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী ছিলেন।” প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, কামাল আহমেদ লাখাই উপজেলার অধিবাসী নন। তিনি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তিনি মোটেও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না। এছাড়া ‘কামাল আহমেদ’ হিসেবে যার ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে, তিনি লাখাইয়ের করাব ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই কামাল। আবদুল হাই কামাল এসসিপিতে যোগদান করেননি। একটি জাতীয় পত্রিকায় এ ধরনের অসত্য তথ্য পরিবেশন খুবই নিন্দনীয়। এছাড়াও সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে “চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী নোমান, একই উপজেলার ৩ নম্বর দেওরগাছ ইউপি যুবলীগ নেতা এবং ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল করিমকেও সদস্য করা হয়েছে।” প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, মাহবুবুর রহমান চৌধুরী নোমান নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হননি। তিনি ওই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে (আনারস মার্কা নিয়ে) নির্বাচিত হয়েছিলেন, এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের কোনও অঙ্গ বা শাখা সংগঠনের সাথে যুক্ত নন। যুবলীগ নেতা এবং ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা ফজলুল করিমও উল্লিখিত সংগঠনসমূহে যুক্ত ছিলেন না। আমার দেশ-এর সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়েছে “আরেক সদস্য জেলা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন।” প্রকৃতপক্ষে নাসির উদ্দিন দীর্ঘ তিন দশক ধরে কোনও দলীয় রাজনীতির সাথে যুক্ত নন, এছাড়া তিনি হবিগঞ্জের একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও জেলার সেরা করদাতা। সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়েছে “আ খ ম উস্তার মিয়া সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাহিরের ঘনিষ্ঠ লোক হিসেবে পরিচিত।” প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, তিনি বাহুবল উপজেলার লামাতাশি ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তিনি মোটেও সাবেক এমপি’র ঘনিষ্ঠ লোক নন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী সংগঠকদের গড়া দল। এখানে হবিগঞ্জ জেলা সমন্বয় কমিটিতে যারা যোগদান করেছেন, তারা বিভিন্ন দিক থেকে পরীক্ষিত আন্দোলনের সৈনিক। জেলা সমন্বয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে আগ্রহী অথচ স্থান না পাওয়া কিছু সুযোগসন্ধানী লোক এনসিপির কর্মকাণ্ডে ঈর্ষান্বিত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এনসিপির বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছে। আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে হবিগঞ্জের সর্বস্তরের জনতাকে এ জাতীয় অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাই।
‘আমার দেশ’ পত্রিকায় এ রকম একটি অসত্য তথ্য সম্বলিত সংবাদ পরিবেশন করে দলের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করা সম্ভব নয়। আমরা জেলা সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে এ জাতীয় সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাই, সাথে সাথে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনেরও আহ্বান জানাই।
জেলা সমন্বয় কমিটির পক্ষে—
শেখ ইফতেখার আহাদ
যুগ্ম সমন্বয়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)
হবিগঞ্জ।
মেবাইলঃ ০১৭১৮-৫০৫২২৩