এলভী কাজল: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার ২ দিন পরেই উঠে যাচ্ছে পিচ খোয়া
ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের ১৭ কোটি
টাকার কাজে শুধুই ফাঁকি!
ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের কাজে যেন শুধুই ফাঁকি। একদিক থেকে কাজ হচ্ছে, আর অন্যদিক থেকে উঠেছে। এ ভাবেই ১৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই চিত্র ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ-জীবননগর (ভায়া খালিশপুর) সড়কের। এক সপ্তাহ আগে শেষ হয়েছে ওই সড়ক উন্নয়নের কাজ। ইতিমধ্যে সড়কের অনেক স্থানের পিচ উঠে ভেঙে গেছে। সংস্কার করা অংশে আবার মেরামত করে দেয়া হচ্ছে। সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সড়কটিতে পিচ ও পাথর দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর কাজ শেষ করে ঠিকাদার যন্ত্রপাতি ও মালামাল ফেরত নিয়ে গেছেন। চারদিন পর থেকে সড়কটি বেহাল অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্থানে পিচ-পাথর উঠে গেছে। ঠিকাদার জানিয়েছেন দ্রত সড়কটি আবার মেরামত করে দেবেন। কালীগঞ্জ শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝিনাইদহ অংশে ১৫ কিলোমিটার ও চুয়াডাঙ্গা অংশে ১০ কিলোমিটার ওয়্যারিংকোর্স (অভারলে) করার সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক বিভাগ। সড়কে ৪০ মিলি কার্পেটিং করার কথা। পাশাপাশি সড়কে রঙের কাজ, পাশে পিলার স্থাপন ও মাটির কাজ রয়েছে। এই কাজে ১৭ কোটি ৩০ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি পায় মেহেরপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জহিরুল লিমিটেড। তবে কাজ করেন চুয়াডাঙ্গার রনজু আহম্মেদ। তিনি দাবি করেন, জহিরুল ইসলামের লাইসেন্স তিনি ব্যবহার করছেন। গত আগস্ট মাসের শেষ দিকে ঝিনাইদহ অংশের কার্পেটিং কাজ শুরু হয়। পেভার মেশিন দিয়ে কাজ করায় গত ১০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এখনো পাশের মাটির কাজ, পিলার বসানো ও রঙের কাজ বাকি রয়েছে। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের অনেকে স্থানে কার্পেটিং ফেটে গেছে। কাশিপুর, ঈশ্বরবা, পাতিবিলা এলাকার অনেক স্থানে পিচ-পাথর উঠে গেছে। ঈশ্বরবা এলাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম আক্ষেপ করে জানান, পায়ের আঙুল দিয়ে ঘষা দিলেই পাথর উঠে যাচ্ছে। পাতিবিলা এলাকার বাসিন্দা আসলাম হোসেন বলেন, মানসম্পন্ন পিচ দেয়া হয়নি। তা ছাড়া ভালোভাবে কাজটি হয়নি বলে এই দশা। ফলে কাজ শেষ হতে না হতেই পিচ-পাথর উঠে যাচ্ছে। স্থানগুলো এখন মেরামত করলেও সেটা হবে জোড়াতালি। এ বিষয়ে ঠিকাদার রনজু আহম্মেদ বলেন, কাজটি তিনি খারাপ করেননি। কিন্তু পেভার মেশিনের কাজ হওয়ায় কয়েকটি স্থানে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। খারাপ হয়ে যাওয়া স্থানগুলোতে পেভার মেশিনের তেল পড়েছিল। তেল পড়া জায়গায় পিচ ধরেনি, এ কারণে উঠে যাচ্ছে। এক-দুই দিনের মধ্যে মেরামত করা হবে। সড়কটি তিন বছর ঠিকাদারের নিয়ন্ত্রনে থাকবে বলেও তিনি জানান। এই সময়ের মধ্যে নষ্ট হলেই তিনি মেরামত করে দিবেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডি) মুকুল জ্যোতি বসু বলেন, সড়কের কয়েকটি স্থানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ঠিকাদারকে জানানো হয়েছে। তিনি মেরামত করবেন বলে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের তত্বাবধানে নির্মিত রাস্তাগুলো খুবই দুর্বল ও নিম্ন মানের মালামাল দিয়ে করা হয় বলে প্রতি বছর সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে। এ নিয়ে প্রায় সংবাদ শিরোনাম হয় ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু কোন উন্নতি নেই।