আকিকুর রহমান রুমনঃ-
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে গ্রাম্য মাতব্বরের রোষানলে পড়ে রাহাতুন বেগম নামের এক বিধবা নারীর গৃহে তালা দেয়া হয়েছে।
আজ নিজ গৃহ ছাড়া হয়ে ৬দিন যাবত অবুঝ শিশু নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন এই মহিলা।
ঘটনাটি ঘটেছে বানিয়াচং উপজেলা সদরের ১নং উত্তর পূর্ব ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নন্দীপাড়া ভাদাউড়ি গ্রামে ১লা অক্টোবর শনিবার।
এঘটনায় ওইদিন গ্রাম্য মাতব্বর মালুম উল্লাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বানিয়াচং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভূক্তভোগী।তবে এখনও কোনপ্রকার ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ দাবী ঐ বিধবা মহিলার।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,চার সন্তানের জননী বিধবা নারী রাহাতুন,স্বামী কদ্দুছ মিয়া ছিলেন একজন প্রতিবন্ধী।
একসময় বানিয়াচং বড়বাজারের শহীদ মিনার চত্ত্বরে স্বামী স্ত্রী মিলে পিঠা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
কিন্তু প্রতিবন্ধী স্বামীর হঠাৎ মৃত্যুতে সংসারে নেমে আসে অন্ধকার।স্বামীর মৃত্যুর পর সংসার চালাতে এবং অবুঝ শিশুদের মূখে অন্য তুলে দিতে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে মাছের শুটকি বিক্রি শুরু করেন তিনি। শুটকি বিক্রি করে জীবিকার রসদ খোঁজা সৈনিক রাহাতুন ছেলে সন্তান নিয়ে বাপের বাড়িতে ওয়ারিশমূলে পাওয়া জায়গায় গৃহ নির্মাণ করে থাকেন।
কিন্তু ওয়ারিশমূলে পাওয়া জায়গায় কুনজর পরে বিধবার আপন ভাই মামুন ও তার স্ত্রী আশাফুল বেগমের। এরই প্রেক্ষিতে বিধবা নারী রাহাতুনকে উচ্চেদ করতে একের পর এক ঝগড়ায় লিপ্ত হয় তার ভাই ভাবী।এমনকি গ্রাম্য সর্দার (মাতব্বর) মালুম উল্লাকেও উৎকোচ দিয়ে নিজেদের দলে নেয় ভূমিলোভী ভাই।সম্প্রতি শিশু বাচ্চাদের কথাকাটির তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিধবা রাহাতুনের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয় ভাই মামুন ও তার স্ত্রী।তাকে বেধরক মারপিঠ করে আহত করে।বিষয়টি বিধবা রাহাতুন ওই গ্রামের মাতব্বর মালুম উল্লাকে অবগত করলে,বিষয়টি নিষ্পত্তি না করে উল্টো বিধবার গৃহে নিজের হাতে তালা লাগিয়ে দেন তিনি।পরে নিরুপায় হয়ে ওইদিনই গ্রাম্য মাতব্বর মালুম উল্লা,ভাই মামুন মিয়া,ভাইয়ের স্ত্রী আশাফুল বেগমের বিরুদ্ধে বানিয়াচং থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রাহাতুন।
ঘর ও গ্রামছাড়া বিধবা রাহাতুন জানান,আজ ৬ দিন যাবত শিশু সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি।থানায় অভিযোগ করেছি।এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের কাছে বিচারের জন্য ঘুরছি কিন্তু কোথাও বিচার পাইনি।
এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত গ্রাম্য মাতব্বর মালুম উল্লার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান এই ঘরে তালা দেয়ার বিষয়ে জড়িত নন।
এব্যাপারে বিধবার অভিযোগ তদন্তকারী অফিসার বানিয়াচং থানার এএসআই সাদ্দাম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,বিষয়টি তদন্ত করতে বিধবার এলাকায় গিয়েছি এবং তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
এব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ”র সাথে বিকাল ৪টা ৪৬ মিনিটে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এবিষয়ে আমার কাছে কোন প্রকার অভিযোগ আসেনি তবে এটা থানা পুলিশকে অবগত করার কথাও বলেন তিনি।