মোঃ মোকাররম হোসাইন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি
পৃথিবীর উন্নত মানের উচ্চ পুষ্টি সমৃদ্ধ দামি ধানের জাতের মধ্য একটি হচ্ছে ব্ল্যাক রাইস । যা বর্তমান বিশ্বের নতুন সুপার ফুড হিসেবে বিবেচনা করা হয় । জয়পুরহাট কালাই উপজেলার এই প্রথম ব্লাক রাইস ধান চাষ করে সফল হয়েছে রুবেল মোল্লা। ৮০ দিনের মধ্যে ধান কেটে ফেলে যায়। অন্য ধানের চেয়ে এ ধান ঘরে তুলতে সময় কম লাগে। ফলন ভালো হয় ও দাম ভালো পাওয়া যায় । রুবেলের এমন সাফল্য দেখে এ ধান চাষে অন্য কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেন।
জয়পুরহাট কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের গ্রামের আমজাদ হোসেন মোল্লা ছেলে রুবেল মোল্লা (২৭) । তিনি বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ নিয়ে অনার্স এবং রাজশাহী কলেজ থেকে মাস্টার্স করেন। এই ধানের চাল বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়ে। এই চাল বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। এই চাল অনেক বেশি পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর । ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে কালো চাল অন্যতম । এই চালে শর্করার পরিমাণ সাদা চালের চেয়ে কম, আয়রন, কপার, জিংক ও ভিটামিন বি-এর পরিমাণ বেশি।
স্থানীয় কৃষক আঃ ওহাব বলেন, আমাদের এখানে যে ব্ল্যাক রাইস ধান আবাদ হয়েছে তা দানা খুব ভালো এবং আগাম জাত ধান। দেখতে পাচ্ছি ফলন খুব ভালো জয়েছে। এ ধান কেটে আমরা আগাম আলু লাগাতে পারবো। তাই আগামীতে ইনশাআল্লাহ এ ধান লাগানোর চেষ্টা করছি।
আমার দেখা মতে এ ধানে সার ও কীটনাশক কম লাগে। তাই পরবর্তী এ ধান চাষে কৃষকরা আবাদ করতে আগ্রহী।
কৃষক জহির বলেন, আমাদের এখানে কাল একটা খুব সুন্দর ধান আইছে। ধান খুব লম্বা এবং অনেক সুন্দর হয়েছে ও চাহিদাও ভালো দেখছি। আগামীতে এ ধান আবাদ করা যাবি। তাই আমরা এখন থেকে এ ধানর বীজের কথা বলে রাখছি।
ব্ল্যাক রাইস ধান চাষী রুবেল মোল্লা বলেন, ফেসবুক ও ইউটিউবে ব্লাক রাইচ ধানের গুনাগুন দেখে এ ধান চাষে আগ্রহী হই। বিভিন্ন জায়গায় ধান বীজ খোঁজাখুঁজির পর কুমিল্লা জেলা থেকে ৫শ’ টাকা কেজি দরে অরজিনাল ফিলিপাইন জাতের ধান কিনি। পরে দেড় বিঘা জমিতে ফিলিপাইন জাতের ব্ল্যাক রাইস ধান চাষ করি। অন্যান্য ধানের চেয়ে এ ধানের সময় অনেক কম লাগে। তাই আগে কর্তন করে আগেই রবিশস্য লাগানো যায়। নানা পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এ ধান ও চালের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা পেলে আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে এ ধান চাষ করবেন বলে তিনি জানান ।
উপজেলার নুনুজ বাজারের কীটনাশক ও বীজ ব্যবসায়ী ফেরদৌস হোসেন বলেন, ব্ল্যাক রাইস ধানের উপকারিতার কথা জানার পর ব্যবসায়ী হিসেবে গত বছরে এ ধানটা নেওয়ার জন্য খুবই আগ্রহী থাকলেও পাওয়া যায়নি । এ বছর আমার এলাকায় এ ধান চাষ করে রুবেল । আমি ব্যবসায়ী হিসেবে নানা পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ এ ধান সকল কৃষকের হাতে তুলে দিতে চাই।
কালাই উপজেলা কৃষি অফিসার অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, এ বীজ গুলি সংরক্ষণ করে যাতে সাধারণ কৃষক চাষ করতে পারে সে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। যে কৃষক চাষ করেছে সে বীজ সংরক্ষণ করে অন্য কৃষকদের দিচ্ছে। কোন কৃষক যদি বীজ চায় তাহলে আমরা এ কৃষকের নিকট থেকে ব্যবস্থা করে দেব। আমাদের পক্ষথেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে। এটা বানিজ্যিক করার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।