বিশেষ প্রতিনিধি চট্রগ্রামঃ
চট্টগ্রাম কাষ্টমস্ এর বাজেয়াপ্ত নিলামের মালামাল নাটকিয়া ভাবে ধ্বংস না করে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রাতের আধারে খোলা বাজারে কয়েক কোটি টাকা বিক্রি করার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।
সংবাদ সূত্রে জানা যায়, গত ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ চট্টগ্রাম কাষ্টমস্ এর বাজেয়াপ্ত বিভিন্ন ধরণের মালামাল কাস্টমস ও নিলাককারী প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতিতে ৩৮০ কন্টেইনার নিলামে বাজেয়াপ্ত মাল ধ্বংস করা হলেও নাকটিয় ভাবে গত ০৭ই নভেম্বর রাতের আধারে ১০০ কন্টেইনার মাল মাটির গর্ত থেকে তুলে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে পাচার করার সময় প্রশাসন খবর পাওয়ার পরে ২০ কন্টেইনার মালামাল আটকে যায় প্রশাসনের জালে। যার মধ্যে মরণঘাতী ক্যানসারের জীবানু মুরগীর খাবারসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী রয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর আনন্দ বাজার এলাকার শেষ মাথায় চট্টগ্রাম সিটি আউট রিং রোড প্রজেক্ট ইন্সপেক্টরা ইঞ্জিনিয়ার অফিসের ১৩০ গন্ডা জমির মধ্যে কন্টেইনারের মালগুলো গর্ত করে পুতে ফেলা হয়। উক্ত নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের নাম কে.এম কর্পোরেশন। কিন্তু দুই মাস পরে রাতের আধারে আবার কেন পঁচা ধ্বংসকারী মালগুলো উত্তোলন করে চোরাকারবারীর মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে যে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে চট্টগ্রামের সচেতন মহলের। ধ্বংসপ্রাপ্ত মালামালের মধ্যে ছিল, বিদেশী মদ, বিয়ার, পারফিউম, আপেল, মাল্টা, মুরগীর খাবার ও মসলা জাতীয় পণ্য সামগ্রী।
গত ০৭ ই নভেম্বর গভীর রাতে নগরীর খাতুনগঞ্জ, পাহাড়তলী, সীতাকুন্ড, ফৌজদার হাট বিভিন্ন স্থানে মালগুলো বড় ড্রাম ট্রাক বোঝাই করে চলে যায়। এঘটনার পরে রাতে বাজেয়াপ্ত মাল মাটির গর্ত থেকে তুলে পাচার করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চট্টগ্রাম কাষ্টমস এর ডিপুটি কমিশনার (কাস্টমস প্রিভেন্টিভ) মুহাম্মদ মাহফুজ আলম ও বন্দর থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে উদ্ধারকৃত কন্টেইনার মালগুলো মাটিচাঁপা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এবং জড়িত ০৭ জনকে আটক করেন। এ সময় উপস্থিত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা ঘটনার ছবি তুলতে চাইলে চট্টগ্রাম ডিপুটি কমিশনার মুহাম্মদ মাহফুজ আলম কোন ছবি না তোলার জন্য নিষেধ করেন।এবং সকাল ১০ টায় চট্টগ্রাম কাষ্টমস্ অফিসে বিস্তারিত তথ্যের জন্য গণমাধ্যম কর্মীদেরকে আসার অনুরোধ করেন।
কিন্তু দীর্ঘ সময় চট্টগ্রাম কাষ্টমস অফিসে গণমাধ্যমকর্মীরা অপেক্ষা করার পরে ডিপুটি কমিশনারের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং কাষ্টমস্ কমিশনারের সাথে আলাপ করে বিষয়টি মিডিয়ায় জানানো হবে। কিন্তু নাটকিয় তাল বাহানের মধ্য ৮ নভেম্বর দিনটি অতিবাহিত হওয়ার পরে ডেপুটি কমিশনার মুহাম্মদ মাহফুজ আলম কাস্টমস এর কোন কর্মকর্তা নয়, নিলামকারী প্রতিষ্ঠান কে.এম কর্পোরেশন এর ম্যানেজার মোরশেদ আলম এর সাথে দেখা করতে বলেন। গোপন সংবাদ সূত্রে জানা যায়, নিলামকালী বাজেয়াপ্ত মাল পাচারকারী সদস্যরা হলেন মোঃ আব্দুল মান্নান, পিতাঃ মোঃ ইব্রাহিম, গ্রামঃ হামদু মিয়ার বাড়ী, চরলক্ষ্যা, থানা- বন্দর, জেলা-চট্টগ্রাম।মোঃ আব্দুল মোতালেব পিতা-মৃত ইউছুপ প্রকাশ বাললা মেম্বার, আব্দুল বারিক সওদাগরের বাড়ী।
অন্য আরেকজন সদস্য হলেন মোঃ নুরুল কবির মিঠু, পিতা- নুরুল আলম, গ্রাম- মকবুল আলীর বাড়ী, নিমতলা, থানাঃ বন্দর, চট্টগ্রাম। এছাড়াও স্থানীয় প্রভাবাশালীদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ পাচার চক্রটি সক্রিয় বলে জানা যায়।
আটকৃত ড্রাম ট্রাকের নাম্বার গুলো হলো- চট্টমেট্রো-ট-১১-৯০৬৫, চট্টমেট্রো-ট-১১-২৬৩৮, চট্টমেট্রো-ট-১২-০৩৮১, চট্টমেট্রো-ট-১১-৩৩৫৪, চট্টমেট্রো-ট-১২-০২৪৫, চট্টমেট্রো-শ-১১-৪৩৮০, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-১৫৬৩ এছাড়াও আরো ১৫টি ড্রাম ট্রাক রয়েছে। উল্লেখ, মোঃ আব্দুল মোতালেব পিতা-মৃত ইউছুপ প্রকাশ বাললা মেম্বার, আব্দুল বারিক সওদাগরের বাড়ী।নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে খালী জায়গায় মাসিক ভাড়ার চুক্তিনামা ০৫ বছর মেয়াদে আব্দুল মান্নান জায়গাটি ভাড়া নেয়। ভাড়ার চুক্তিনামায় উল্লেখ রয়েছে উক্ত খালী জায়গায় দেশের প্রচলিত আইন বিরোধী অবৈধ কোন ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারবে না করিলে জমির মালিক দায়ী থাকিবে না প্রথম পক্ষ তার দায়বার বহন করবে এই মর্মে উল্লেখ রয়েছে। তার পরও প্রশাসন কাষ্টমস্ গোয়েন্দাকারী সংস্থার চোঁখ ফাঁকি দিয়ে এহেন রাষ্ট্র বিরোধী প্রাণঘাতী কর্মকান্ড কিভাবে পরিচালিত হয় সে বিষয়ে জনমনে নানারকম প্রশ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজ এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া কোন প্রকার সম্ভব হয়নি।