চলমান দেশ ডেস্ক:
হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভার অন্তর্গত ৭ নং ওয়ার্ড কাটিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে কয়েক যুগ ধরে বিদ্যালয়ের প্রবেশপথ সহ পুরো বিদ্যালয় এলাকা জুড়ে রাস্তার উপর মাছের আড়ৎ বসিয়ে ব্যবসা করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল।
আড়ৎ গুলোতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকার মাছ ব্যবসায়ীরা এসে পার্শ্ববর্তী নাসিরনগর, বিজয়নগর ও লাখাই উপজেলার হাওরাঞ্চল থেকে আসা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সস্তায় কিনে নিয়ে যান। ঢাকা, সিলেট, ভৈরবসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ আড়ৎগুলো থেকে মাছের চালান পাঠানো হয়। সুস্বাদু পানির মাছ হওয়ায় এ মাছের সাধ একটু ভিন্ন। তাই লোকজনের সমাগম ও একটু বেশি।
আবার রাজশাহী, যশোহ, চট্টগ্রাম, সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন রাতভর এ আড়তে মাছ আসে। এ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে মাছের আড়ৎটি অপসারণের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও মাছের আড়ৎটি সরানো হয়নি।
প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাছের দূর্গন্ধে এলাকায় বসবাস ও স্কুলের কোমলমতি ছেলে মেয়েদের স্কুলে আসা-যাওয়া,লেখাপড়া করা খুবই কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ার পথ বন্ধ করে ও কোন নেয়নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসা করে আসছি একটি মহল। মাছের আড়তের পঁচা গন্ধের কারণে স্কুলের ছোট ছোট শিশুরা বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিদিন পানি ফেলে বিদ্যালয়ে ঢুকার প্রবেশপতি কারাচ্ছন্ন করে রাখায় ছোটখাটো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের সামনে মাছের আড়ৎ গড়ে উঠায় বাজারের লোকজন বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রস্রাব-পায়খানা করে পরিবেশ দূষিত করছে প্রতিনিয়ত। সীমাহীন দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না এই স্কুল ও শিক্ষার্থীদের উপর থেকে। দুর্ভোগ আর দুর্গন্ধ এই বিদ্যালয়টিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।
বিশিষ্ট পরিবেশবিদ শাহ তরিত বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের এই প্রভাব বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত করবে। পঁচা, দুর্গন্ধ অস্বস্তিকর পরিবেশের কারণে অনেক অভিভাবক শিক্ষার্থীদের এ বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। এখানে মারাত্মকভাবে বিক্রিতা হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। একটি দেখার যেন কেউ নেই।
কাটিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি পংকজ কুমার সাহা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তার উপর মাছের আড়ৎ থাকায় ছেলে মেয়েরা দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ আড়ৎটি বিদ্যালয়ের সামনে থেকে সরিয়ে অন্য কোনো ভাল জায়গায় দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবী করে এলেও এ ব্যাপারে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
মাধবপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে মাছের আড়ৎটি এখান থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও নেওয়া যায় কি না এ বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম জাকিরুল হাসানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর আহসান জিসানের সমন্বয়ে বাজার পরিচালনা কমিটি ও এলাকাবাসীর সহায়তায় শারদীয় দূর্গা পূজার পরপরই মাছের আড়ৎটি বিদ্যালয় এলাকা থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্যত্র সরানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।