বাস্তবে মসজিদ-মাদ্রাসা, রাস্তার অস্তিত্ব নেই; অথচ সরকারি নথি বলছে এগুলো আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় টিআর, কাবিখা ও কাবিটায় বরাদ্দ পাওয়া এমন ৮০টি গায়েবি প্রকল্পের অস্তিত্ব মিলেছে যুগান্তরের অনুসন্ধানে। ঈদগাহ, কবরস্থান, শ্মশান ও মন্দিরের মতো ধর্মীয় জায়গার নামে ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা। এলাকাবাসীর চাঁদায় গড়ে ওঠা ঈদগাহ এবং কবরস্থানকে সরকারি প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের ঘটনাও ঘটেছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সরকারি উন্নয়ন কাজে এসব লুটপাট হয়েছে। ৮০টির বাইরে আরও ৫০টি প্রকল্পে সামান্য কাজ করে বিল উত্তোলন করা হয়েছে। এসব গায়েবি ও ভুয়া প্রকল্পের নামে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার ও স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা মিলেমিশে এসব লুটপাট করেছেন। নবীনগরের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল সব সময়ই অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। বিভিন্ন সভা ও সমাবেশে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তারপরও এমন ভয়াবহ দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে।
সাইনবোর্ড আছে, মাদ্রাসা নেই : শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডে স্থানীয় চেয়ারম্যান আমির হোসেন বাবুলের পুকুরপাড়ে ছোট্ট একটি টিনের মসজিদ রয়েছে। ওই মসজিদকে মাদ্রাসা নাম দিয়ে ফেস্টুন ঝুলিয়ে ‘শ্যামগ্রাম দক্ষিণপাড়া মহিলা মাদ্রাসার মাঠ ভরাট’ প্রকল্প দেখিয়ে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের সভাপতি সংরক্ষিত ওয়ার্ড মেম্বার ফাতেমা বেগম।
এ বিষয়ে বিএনপি দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমির হোসেন বাবুল বলেন, ফাতেমা মেম্বারকে প্রকল্পের সভাপতি বানিয়েছি ঠিকই, কিন্তু টাকা তুলে আমি মসজিদ-মাদ্রাসার সামনে মাটি ভরাট করেছিলাম। সব মাটি পুকুরের পানির নিচে চলে গেছে, তাই আপনারা এখন মাটি দেখতে পারবেন না। পানি খিচ্চা (উত্তোলন করে) দেখাইলে বুঝতে পারতেন পানির নিচে যে কত মাটি আছে।
মসজিদ নেই, সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে টাকা : ইব্রাহিমপুর গাউছুল আজম জামে মসজিদ উন্নয়নের নামে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন জাহের মিয়া। প্রস্তাবিত ওই মসজিদের সভাপতি শাহ্ সুফি মো. মসিউজ্জামান চিশতীও জানেন না এখানে প্রকল্প বরাদ্দ করা হয়েছে। এখানে সাইনবোর্ড রয়েছে শুধু। তবে গাউসুল আজম দরবার শরিফের নিজস্ব উদ্যোগে এখানে ইব্রাহিমপুর গাউছুল আজম জামে মসজিদ নামে একটি মসজিদ তৈরি পরিকল্পনা রয়েছে।
এ বিষয়ে মসজিদের সভাপতি শাহ্্ সুফি মো. মসিউজ্জামান চিশতী বলেন, ‘আমরা নিজস্ব উদ্যোগে এখানে মসজিদ করার কাজ শুরু করব। এখানে সরকারি কোনো টাকা পাইনি। আমাদের নামে কে টাকা উঠিয়ে নিল, এটাও জানি না।’ এ বিষয়ে গায়েবি প্রকল্পের সভাপতি জাহের মিয়া বলেন, ‘আমি ইব্রাহিমপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের জন্য ৫০ হাজার টাকা পাইছি। কিন্তু ইব্রাহিমপুর গাউছুল আজম জামে মসজিদের নামে কোনো টাকা আনিনি।
এ বিষয়ে মসজিদের সভাপতি শাহ্্ সুফি মো. মসিউজ্জামান চিশতী বলেন, ‘আমরা নিজস্ব উদ্যোগে এখানে মসজিদ করার কাজ শুরু করব। এখানে সরকারি কোনো টাকা পাইনি। আমাদের নামে কে টাকা উঠিয়ে নিল, এটাও জানি না।’ এ বিষয়ে গায়েবি প্রকল্পের সভাপতি জাহের মিয়া বলেন, ‘আমি ইব্রাহিমপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের জন্য ৫০ হাজার টাকা পাইছি। কিন্তু ইব্রাহিমপুর গাউছুল আজম জামে মসজিদের নামে কোনো টাকা আনিনি।