বাবা-মা নেই মাথার উপর দাঁড়িয়ে থাকা এক ছায়া রুপি বটবৃক্ষ। বাবা মানে সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রমই এক মানুষ। যে নিজের সুখের কথা চিন্তা না করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সন্তানের সুখের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেয়। বাবা মানে ভালোবাসার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।
সুনামগঞ্জের ছাতকে নেশার টাকা না পেয়ে শিকলে বেঁধে মমস্বর আলীর (৭৫) নামের এক বৃদ্ধকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে ছেলে সুহেল মিয়ার (৩২) বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে সেই ছেলেকে পুলিশে ধরিয়ে দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ। পরে পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান।
কিন্তু একমাত্র ছেলের কষ্ট সহ্য করতে পারছিলেন না বৃদ্ধ বাবা। নির্যাতনের সব কষ্ট ভুলে গিয়ে নিজেই আদালতে গিয়ে ছেলের জামিনের ব্যবস্থা করেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে গিয়ে ছেলেকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনেন। এ সময় ছেলেকে বুকে ঝড়িয়ে ধরেন মমস্বর আলী। তাৎক্ষণিক বাবার পা ধরে ক্ষমা চাইলেন ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, সুহেল মিয়া জেল থেকে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেই তার বাবাকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমেদের বাড়ি যান। সেখানে গিয়ে কখনো নেশা করবেন না বলে শপথ করেন তিনি। একইসঙ্গে তার বৃদ্ধ বাবাকে ও মারধর করবে না বলে প্রতিজ্ঞা করেন। চেয়ারম্যানও তাকে ক্ষমা করে দেন।
রোববার (২৯ আগস্ট) বৃদ্ধ বাবা মমস্বর আলীর (৭৫) বলেন, আমার একটি মাত্র ছেলে সন্তান। অনেক কষ্ট করে তাকে বড় করেছি। পৃথিবীতে আর কয়দিনই বা বাঁচব, তাই যে কটাদিন আছি ছেলেকে চোখের সামনে দেখতে চাই। আমি তার দেওয়া সব কষ্ট ভুলে গিয়ে তাকে জামিনে মুক্ত করেছি। সে আমাকে কথা দিয়েছে কখনও আর আমাকে কষ্ট দিবে না। এতেই আমি খুশি।
ছাতক উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ বলেন, নেশার টাকা না পেয়ে শিকলে বেঁধে মমস্বর আলীরকে (৭৫) নির্যাতন করছিল তার ছেলে সুহেল মিয়া। পরে আমি সেখানে তাৎক্ষণিক উপস্থিত হয়ে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিই। পরে ২০ দিনের মাথায় তার বাবা তাকে জামিনে মুক্ত করে আনেন।