আজ বুধবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, ‘পত্রিকা প্রকাশ করতে হলে প্রথমে ডিক্লারেশন নিতে হয়, এছাড়া কেউ পত্রিকা প্রকাশ করতে পারে না। অনলাইনের ক্ষেত্রে তো সেটা হওয়া সমীচীন। সুতরাং, আমরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া মোটামুটি একটা পর্যায়ে নিয়ে যাব। আমরা আলোচনা করেছি আগামী বছর থেকে কোন অনলাইনকে আত্মপ্রকাশ করার আগেই রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে। তাহলে এখানে একটা শৃঙ্খলা আসবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপাতত এটা (চালুর পর নিবন্ধন দেয়া) রেখেছি এজন্য যে, অনেকগুলো অনলাইন চালু আছে। আমরা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করেছি অনেক পরে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আইপি টিভি সারা পৃথিবীর বাস্তবতা, এটি নিউ মিডিয়া। এটিকে বন্ধ করা সমীচীন নয়। তবে, ব্যাঙের ছাতার মতো আইপি টিভি, এটি হতে পারে না। এজন্য আইপি টিভি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছি। যেগুলো সত্যিকার অর্থে কাজ করতে চায়, তাদেরকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভাবছি যখন কোন অনুষ্ঠান বা সংবাদ সম্মেলন হবে এক ঝলকে যেন কোনটা টিভি আর কোনটা আইপি টিভি এটা যেন বোঝা যায়। ওখানেও একটা শৃঙ্খলা আনতে হবে। একই ধরণের বুম (মাইক্রোফোন) যেন ব্যবহার করতে না পারে। সেখানে যেন অ্যাট লিস্ট আইপি টিভি লেখা থাকে।’
সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী কোন আইপি টিভি খবর প্রকাশ করতে পারবে না জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে আইপি টিভি খবর প্রচার করে আমরা খুব সহসা সেগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করব।’
পত্রিকার প্রচার সংখ্যা বাস্তব সম্মত নয় জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সেখানেও একটা শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ নিয়েছি। (প্রচার সংখ্যা) অন্তত বাস্তবতার কাছাকাছি আনতে হবে। এ রকম অবাস্তব ও ভৌতিক প্রচার সংখ্যা যুগের পর যুগ চলতে থাকবে, সেটি হয় না। কিছু পত্রিকা আছে হঠাৎ হঠাৎ বের হয়, যেদিন বিজ্ঞাপন পায় সেদিন বের হয়, যেদিন ক্রোড়পত্র পায় সেদিন বের হয়। এসব পত্রিকার যিনি সম্পাদক, তিনিই রিপোর্টার, তিনিই প্রকাশক। ওনার একটা ব্রিফকেস আছে, পত্রিকাও ব্রিফকেস বন্দি। ব্রিফকেসে করে সেই পত্রিকার অফিসে অফিসে বিলি করে বেড়ায়। এগুলো আসলে পত্রিকা নয়, আমরা সেগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে ২১০টির ব্যাপারে সব ডিসিদের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। যেগুলো বের হয় না, সেগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয় না। আরও ২০০টির বেশি আছে এই রকমের পত্রিকা। সেগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে, ধীরে ধীরে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যম কর্মী আইন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে, এটি সংসদে পাস হলে, ইলেকট্রনিক মিডিয়া এমনকি অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরাও আইনগত সুরক্ষা পাবে। এখন যে কথায় কথায় ছাঁটাই, বিনা নোটিশে ছাঁটাই, তুমি কালকে থেকে আসিও না, এগুলোর বলার সুযোগ থাকবে না।’
মন্ত্রী বলেন , ‘বিদেশি চ্যানেলগুলো ক্লিন ফিড (বিজ্ঞাপন ছাড়া অনুষ্ঠান) যখন পাঠাবে তখনই সেগুলোর সম্প্রচার শুরু হবে।’
পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১ অক্টোবর থেকে ক্লিন ফিড নেই এমন বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।
বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সংলাপ সঞ্চালনায় তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ক্যাবল অপারেটরদের দুই বছর আগে থেকে তাগাদা দিয়েছি, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিদেশি চ্যানেলগুলোকে ক্লিন ফিড চালাতে হবে। তাগাদা দেয়ার পর বেশ কয়েকবার তাদের সঙ্গে বসেছি। মাস দেড়েক আগে সবার সঙ্গে বসেছিলাম, সিদ্ধান্ত ছিল ১ অক্টোবর থেকে ক্লিন ফিড কার্যকর হবে। এটি ছিল সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত।’