হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামে বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে ওসিসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে আশঙ্কা জনক অবস্থায় ৪ জনকে সিলেটে প্রেরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে হরিবল ঠাকুর মন্দিরের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন মাজিদ আবমাননার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে গুমগুমিয়া গ্রামের স্থানীয় বেশকয়েকজন যুবক।
এসময় তারা হরিবল মন্দিরের সামন হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথিমধ্যে পূজারীদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। হরিবল মন্দিরের সামনে দূর্গা উৎসব চলছিলো। একপর্যায়ে মুর্হুতেই দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের প্রায় ১৫ জন লোক গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুঁটে যান নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডঃ আলমগীর হোসেন চৌধুরী এবং নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ডালিম আহমেদ।
এসময় তারা নিজের জীবন বাজি রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করেন। সংঘর্ষ চলাকাল ইটপাকটেল পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান থানার ওসি ডালিম আহমেদ। ইটপাকটেল এর আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে পড়েন ওসি। এসময় তাকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ভর্তি প্রদান করা হয়। সংঘর্ষে আহতরা হলেন, নিরাপদ দাশ (৩৮),বদরুল হোসেন (১৬),সতীশ চন্দ্র দাশ (৬২), পুরবি দাশ (৫২), রুকু দাশ (৩৫), প্রিয়াংকা দাশ (২২), বিউটি দাশ (২৫), ফুটন দাশ (৩০), সুপ্রবি (২৫), সুক্রন্দ দাশ (২৫), গনজিৎ দাশ (৫৫), ইব্রাহীম মিয়া (৩০), তাদের উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও সিলেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব।
এব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহি উদ্দিন জানান, গুমগুমিয়ার পূজা মন্ডপের সামনে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কোনো প্রকার প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়নি। প্রতিমা ভাঙা ঠেকাতে গিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন হবিগঞ্জ ১ আসনের এমপি গাজী মোহাম্মাদ শাহনওয়াজ মিলাদ, সিলেটের ডিআইজি মো. মফিজ উদ্দিন, পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহি উদ্দিন, সার্কেল এএসপি আবুল খায়েরসহ পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।