মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে বিএনপির নেতৃবৃন্দ হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ এম এল বি মেছবাহ উদ্দিন আহমেদের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে তিনি তা নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নেতাকর্মীরা ৫ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাঁদের আগাম জামিন দিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার তাঁরা উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হন। ৪০ জন নেতার মাঝে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হাশিম, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এনামুল সেলিম, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ চৌধুরী ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুশফিক আহমেদও রয়েছেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞ পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক চৌধুরী।
পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক চৌধুরী জানান, বিএনপির ৪০ নেতা আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে তাঁদের পক্ষে অর্ধশতাধিক আইনজীবী জামিনের প্রার্থনা করেন। আমি রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে এই জামিনের বিরোধিতা করি। দীর্ঘ শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক পরে আদেশ দেবেন বলে ঘোষণা দেন। দুপুর ২টার দিকে তিনি সকলের জামিন নামঞ্জুরের আদেশ প্রদান করেন।
আদালতে বিএনপির নেতারা আত্মসমর্পণ করবেন জানতে পেরে শত শত নেতাকর্মী আদালতে উপস্থিত হন। আত্মসমর্পণের আগে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গউছ বলেন, জেলজুলুম করে আমাদেরকে এই সরকার দমিয়ে রাখতে পারবে না। অচিরেই জেল থেকে মুক্ত হয়ে আন্দোলন জোরদার করা হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা ও তাঁর মুক্তির দাবিতে গত ২২ ডিসেম্বর দুপুরে হবিগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। এতে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশ বাধা দিলে নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছোড়েন এবং অন্যদিক থেকে পুলিশ এক হাজার রাউন্ডের অধিক টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হন।
এ ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর ৬৫ জনের নাম উল্লেখসহ প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা দায়ের করেন হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসান। এ মামলার আগে ও পরে পুলিশ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।