সুনামগঞ্জে মামলা আপোষ মিমাংসা করে আসামিকে সাজা না দিয়ে পাঁচ শর্তে ‘নির্যাতিত’ ৫০ নারীকে স্বামীর সংসারে সুখ-শান্তিতে বসবাসের সুযোগ করে দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ জাকির হোসেন এই ব্যতিক্রমী রায় দেন। রায়ের পর আদালতের পক্ষ থেকে ক ৫০ দম্পতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
মামলা নিষ্পতি করতে যে পাঁচ শর্ত দেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, স্বামী-স্ত্রী সন্তানাদি নিয়ে পরিবারের সব সদস্যদের সাথে শান্তিপুর্ণভাবে সংসার ও ধর্মকর্ম পালন করবেন, সংসারে শান্তি নষ্ট হয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন, স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করা যাবে না, পরিবারের যেকোন সমস্যা আলোচনা করে সমাধান করতে হবে এবং স্ত্রীকে কখনো নির্যাতন করা যাবে না।
আদালত কোন আসামিদের কারাগারে না পাঠিয়ে সংসার জীবন চালিয়ে যাওয়ার শর্তে বাদীদের সঙ্গে আপোস করিয়ে দিয়েছেন। এর আগেও পারিবারিক কলহ, নারী নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগ নিয়ে আদালতে বিচারপ্রার্থী শতাধিক দম্পতির সংসারে জোড়া লাগে বিচারক মো. জাকির হোসেনের আদালত।
এ সময় সকল মামলার বাদী-বিবাদী, তাদের আইনজীবী ও পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আদালতের পক্ষ থেকে ৫০ দম্পতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
উল্লেখ্য, যৌতুকসহ নানাবিধ কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে সংসার থেকে বিতাড়িত ৫০ নারী তাদের স্বামীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় আদালতে এসব মামলা করেছিলেন।
সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় বলেন, ‘আদালত পৃথক ৫০টি নারী-শিশু নির্যাতন দমন মামলায় একসঙ্গে এটি একটি যুগান্তকারী রায়। আদালতে যে শুধু শাস্তি হয় তা না, পরিবারে শান্তিও ফেরানো হয়। এই রায় তারই উদাহরণ। এর আগেও ওই আদালতের বিচারক এমন অনেক রায় দিয়েছেন। যার ফলে আদালতের প্রতি মানুষের আরো বেশি আস্থা ফিরে আসবে। আদালতে বর্তমানে মামলা জট রয়েছে। এ ধরনের রায়ের মাধ্যমে মামলা জটও কমে আসবে।