নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রয়ণ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় যে নারী ও শিশুসহ ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার পর পনেরো জনকে বিভিন্ন মাছ ধরা ট্রলার উদ্ধার করেছে। বাকিরা এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাবিবুর রহমান বিবিসিকে বলেন, একটি মাছ ধরা নৌকায় করে তারা ভাসানচর থেকে পালানোর সময় আনুমানিক দশ কিলোমিটারের মতো দূরে যেতেই খারাপ আবহাওয়ার কারণে ডুবে যায়।
কোস্ট গার্ড উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে।
উদ্ধারপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৪ জন নারী-পুরুষ এবং একটি শিশু রয়েছে। তারা সবাই বিভিন্ন মাছ ধরা ট্রলারে করে আবার ভাসানচরে ফিরে এসেছে বলে জানাচ্ছে কোস্টগার্ড।
কর্নেল রহমান জানিয়েছেন, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা বা এর কাছাকাছি সময়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
পরিবারসহ পালিয়ে যাচ্ছিলেন এই রোহিঙ্গারা। ধারণা করা হচ্ছে নিখোঁজদের মধ্যে আরও নারী ও শিশু থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
যারা ফিরে এসেছেন তারা জানিয়েছেন, যে নৌকাটি ডুবে যাওয়ার পর বেশ কয়েকটি দলে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
সেখানে নিখোঁজদের সন্ধানে এখনো অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে তিনি। নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড সমন্বিত-ভাবে এই অভিযান পরিচালনা করছে।
হাবিবুর রহমান বলছেন, তারা এখনো পর্যন্ত কোন মরদেহ উদ্ধার করেননি।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়া নৌকা এবং তাতে থাকা জীবিত আর কাউকে উদ্ধারের জন্য পাওয়া যায়নি।
তাই এই দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেছে কিনা অথবা বাকিরা নিরাপদে কোথাও পালিয়ে গেছে কিনা সেটিও পরিষ্কার নয়।
২০১৭ সালে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এক নৃশংস অভিযান শুরুর পর প্রায় দশ লাখ শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
তাদের বেশিরভাগকেই আশ্রয় দেয়া হয়েছে কক্সবাজারের নানা শিবিরে।
রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে স্থানান্তরের জন্য নোয়াখালীর প্রত্যন্ত দ্বীপ ভাসানচরে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তোলা হয়।
যেখানে নানা ধরনের উন্নত সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা হয়।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রথম দফায় দেড় হাজারের কিছু বেশি রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়।
এরপর আরও কয়েক দফায় ১৯ হাজারের মতো রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
কিন্তু এর কিছুদিনের মধ্যেই সেখান থেকে পালাতে শুরু করে রোহিঙ্গারা।