সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় ভূয়া সাংবাদিকদের দাপটে অতিষ্ঠ জনগণ। এই উপজেলার ছোট খাটো সামাজিক বা পারিবারিক সমস্যার কথা শুনলেই ছুটে যায় এসব ভূয়া সাংবাদিকরা।
সংবাদ প্রচারের নামে তাদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হয়রানী করে হাতিয়ে নেয় টাকা। নিজেরা প্রাথমিকের গন্ডি না পেরিলেও দাপটের সাথে গলায় নাম ঠিকানা বিহীন ছত্রাকের মত বেড়ে উঠা অনলাইন পোর্টালের কার্ড ঝুলিয়ে প্রতারনা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
গোয়াইনঘাট উপজেলার এমনই একজন ভুয়া সাংবাদিক আব্দুর রহিম উদ্দিন। কিছুদিন পূর্বে সিএনজি ছিলেন চালক। বর্তমান উপজেলার রাধানগর বাজারে দর্জির কাজের সাথে যুক্ত। পাশাপাশি নতুন করে নাম লিখিয়েছেন সাংবাদিকতায়। অনুসন্ধানে জানা যায়,৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ করে একটি ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইন টিভি বা পত্রিকার মালিক হয়ে নিজেই বনে গেছেন সম্পাদক। ওই ভুয়া পোর্টালে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে দিচ্ছেন সাংবাদিক নিয়োগে।
সাম্প্রতি গোয়াইনঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার জসিম উদ্দিন’র কাছে কোন কারন ছাড়াই সংবাদ প্রচারের নাম করে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে রহিম উদ্দিন। কিন্তু কেন টাকা দিতে হবে এ ব্যাপারে কোন কারন জানায় না সে। এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি মেম্বার জসিম উদ্দিন বলেন, গতকাল এবং আজ আমার কাছে এক সাংবাদিক লাইভ করার ভয় দেখিয়ে ফোন চাঁদা দাবি করে। আমি তার দাবি করা অর্থ দিতে অস্বীকার করায় রহিম উদ্দিন আমার ছবি এবং আমার নাম দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা অপপ্রচার চালায়। আমি তার এমন মনগড়া ফেসবুক সাংবাদিকতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এবং এসব ভুয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
তিনি আরও জানান, গত কিছুদিন আগে চাঁদা দাবি করা ফলে জাফলং পর্যটন ব্যবসায়ী এবং সদস্যরা মিলে রহিম উদ্দিনকে গোয়াইনঘাট থানায় সোপোর্দ করে। পরে তার মা বোনের কান্না ও কড়জোর করায় আমি নিজে গোয়াইনঘাট থানা থেকে আমার জিম্বায় মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে নিয়ে আসি। কিন্তু কুকুরের লেজ সোজা হওয়ার হয়। বিসাক্ত সাপের মত সে এখন আমকেই দংশন করতে চায়। আমি অবিলম্বে জসিম উদ্দিনসহ সকল ভূয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যতই দিন যাচ্ছে গোয়াইনঘাটে ভুয়া সাংবাদিকদের উৎপাতে দিন দিন বেড়েই চলছে। এলাকার চিহিৃত বখাটেরা প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা খাটানোর জন্য কিছু সার্থলোভী নামধারী সম্পাদককে টাকা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে সাংবাদিকতার পরিচয়পত্র কার্ড। এসব পরিচয়পত্র কার্ড গলায় ঝুলিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান,ব্যবসায়ী ও সাধারন মানুষকে ঠকিয়ে জীবন জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছে। ভূয়া সাংবাদিকেরা এভাবে চলতে থাকলে সাংবাদিক সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে।
এদেরকে খুঁজে বের করে সাংবাদিক সমাজ থেকে বিতাড়িত না করলে দেশ ও সামাজের উন্নয়ন কাজ বারবার বাধাগ্রস্থ হবে বলে মনে করছেন সূশীল সমাজ ও প্রকৃত সাংবাদিক মহল।