একই মামলায় অপহরণের দায়ে আসামিদের ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং আরো ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন বিচারক। জরিমানার এক লাখ টাকা ভিকটিমকে ক্ষতিপুরণ হিসেবে প্রদানের নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালপুর গ্রামের মফিকুল ইসলামের ছেলে মনির মিয়া, একই গ্রামের আব্দুল হাসিমের ছেলে রুবেল মিয়া, আব্দুস ছালামের ছেলে শামীম মিয়া ও ছাতক উপজেলার দিঘলী চানপুর গ্রামের তাজ উদ্দিনের ছেলে রাজন মিয়া।
রায় ঘোষণার সময় আদালতের উপস্থিত ছিলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নান্টু রায়, সিনিয়র আইনজীবী মল্লিক মঈন উদ্দিন সুহেল, রফিকুল আলমসহ সিনিয়র ও জুনিয়র আইনজীবীগণ।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল ভিকটিম কিশোরী শিল্পী সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুর থেকে গানের অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে সুনামগঞ্জ শহরতলীর কুতুবপুর পয়েন্টে পৌঁছলে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় ভিকটিম ও তার গাসের ওস্তাদ ওই পয়েন্টের আম্বরের খালি চায়ের স্টলে আশ্রয় নেন। এসময় আমাসি মনির মিয়া, রুবেল মিয়া ও শামীম মিয়া একটি মাইক্রোবাস নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমের ওস্তাদকে মারপিট করে ভিকটিমকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তোলে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মাইক্রোবাসেই তিনজন পালাক্রমে ধর্ষন করে। এরপর মাইক্রোবাসের একটি চাকা নষ্ট হয়ে গেলে আসামিরা ভিকটিমকে পায়ে হেটে লালপুর বাজারের দিকে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে দুটি ব্রিজের নীচে ভিকটিমকে আরো দুইবার পালাক্রামে ধর্ষনের পর ভিকটিমের কাকুতি মিনতিতে আসামিরা লালপুর বাজারের মোহন মিয়ার মার্কেটের সামনের রাস্তা ছেড়ে দেয়। পরে ভিকটিমের বাবা ও মা তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এর পরদিন ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে আসামি মনির মিয়া, রুবেল মিয়া, শামীম মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ শোনানি শেষে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত মনির মিয়া, রুবেল মিয়া ও শামীম মিয়াকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অপহরণের দায়ে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ভিকটিমকে দেয়া হবে। একই সঙ্গে জরিমানার ২০ হাজার টাকা অনাদায়ে অরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন বিচারক।