ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার একটি সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সবগুলো নতুন ঘর পানিতে ভাসছে। সেই পানিতে পাট জাগ দিতেও দেখা গেছে। সুবিধাভোগীরা বসবাস শুরুর আগেই বৃষ্টির পানিতে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রান্নাঘর, যাতায়াতের রাস্তা, টিউবওয়েল, বাথরুম পানিতে ভেসে গেছে। আরও কিছুদিন বৃষ্টি হলে পানি ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সূর্যক চরপাড়া গ্রাম এলাকায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় ১৬টি ঘরের সবগুলো নতুন ঘর পানিতে ভাসছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এমন নিচু জায়গাতে ঘর করা নিয়ে শুরু থেকেই স্থানীয় লোকজন জনপ্রতিনিধিরা আপত্তি তুলেছিলেন। তারপরও এই নিচু জায়গায়ই ঘর করা হয়েছে।
রুপাপাত ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য (মেম্বার) নাজমুল হোসেন নাজিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখানে যখন কাজ শুরু করা হয় তখন একবার গিয়েছিলাম। এলাকাবাসীসহ আমি এ জায়গা সম্পর্কে বলেছিলাম, তবে কোনো কাজ হয়নি। তারপর আর ওখানে কোনোদিন যাইনি। এখন হাঁটুসমান পানিতে ভাসছে। টানা বৃষ্টি হলে পানি বেড়ে কোমর পর্যন্ত বা তার ওপরে উঠতে পারে। গতবার কোমর সমান পানি হয়েছিল।
এ বিষয়ে রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজার রহমান মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, ‘জায়গাটা নিচু এলাকা। বেশি করে মাটি অথবা বালু দিয়ে উঁচু করে কাজ করলে এ সমস্যা হতো না। আমরা তো আর কাজ করিনি। আগের ইউএনও সাহেব করেছেন। বর্তমানে ঘরগুলোতে লোকজন ওঠেনি। তারপরও আমি লজ্জায় ওখানে আর যাই না।’
উপহারের ঘর পানিতে ভাসছে, এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে বোয়ালমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারিয়া হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘পানিতে ভাসছে কথাটা সঠিক নয়। ওই জায়গায় যখন কাজ করা হয় তখন ছিল শুষ্ক মৌসুম। এলাকাবাসীর অভিযোগ ঠিক নয়। আসলে জায়গাটা নিচু এলাকা। ওই জায়গায় ঘর নির্মাণের আগে অনেক বালু ফেলা হয়েছে। বালু দিয়ে উঁচু করে তারপর ঘর নির্মাণ করা হয়। তারপরও যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তার সমাধান করা হবে। দ্রুত সরেজমিনে গিয়ে এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাম নেয়া হবে।’
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা (সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) মো. হাসিব সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ওখানে যদি উপহারভোগীরা থেকে থাকেন তাহলে তাদের সঙ্গে কথা বলে অথবা সরেজমিনে গিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা করা হবে।
প্রকল্পের কাজটি চলাকালে উপজেলা ইউএনও হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন ঝোটন চন্দ্র। জলাবদ্ধতার বিষয়ে মোবাইলে বক্তব্য নেয়ার অনেক চেষ্টা করেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।