প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই কার্যক্রমের আওতায় ৭৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুপুর আড়াইটা থেকে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। টিকা দিতে মানুষের লম্বা লাইন হলেও সার্ভার জটিলতায় লাইন সামনে এগোচ্ছে না। টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি দেখা গেছে।
মিরপুর-২, মনিপুর ও আহমেদনগরের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ওই এলাকার বিভিন্ন স্কুলে টিকাকেন্দ্র বসানো হয়েছে। মানুষের ভিড় বেশি হওয়ায় লাইন রাস্তার অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। নারী ও পুরুষের আলাদা লাইন তৈরি করা হয়েছে। দুজনকে একসঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। তারা বেরিয়ে গেলে অন্য দুজন ভেতরে পাঠানো হচ্ছে।
দেখা গেছে, টিকা গ্রহনেচ্ছুরা ভেতরে যাওয়ার পর তার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিয়ে সরকারি সার্ভারে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। সেটি সফল হলে তিনি টিকা পাচ্ছেন। সার্ভারে নানা ধরনের জটিলতা ও সবার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তথ্য না মেলায় অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও টিকা পাচ্ছেন না। এজন্য বাইরে অপেক্ষমাণ নারী-পুরুষের লাইন কমছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
সাজ্জাদ রহমান ৬৫ বছরের বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে মনিপুর স্কুলের পাশের টিকাকেন্দ্রে এসেছেন। দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা পাননি তিনি। সাজ্জাদ বলেন, ভেতরে মানুষ গেলে বের হতে অনেক দেরি হচ্ছে। দুই ঘণ্টা বাবাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে এখনো টিকা পাইনি। কখন পাবো তাও অনিশ্চিত। বেশি দেরি হলে টিকা না নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন বলে জানান তিনি।
কেউ কেউ আবার দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা না পেয়ে বিরক্ত হয়ে চলে গেছেন। আসমা বেগম তার স্বামীকে নিয়ে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে টিকা না পেয়ে চলে যাওয়ার সময় বলেন, বাসায় ছোট বাচ্চা রেখে এসেছি, দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি আর সম্ভব নয়। আগামীকাল বুধবার এ কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে তাই কাল সকালে আসবেন বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে মিরপুর-১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইসমাইল মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এর আগে শতাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত হন। সারিবদ্ধভাবে টিকা কার্যক্রম শুরু করা হলেও সার্ভার জটিলতার কারণে দ্রুত টিকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এর আগে গণটিকা প্রদানের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে এলে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্ভারে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা দিতে হচ্ছে। সার্ভারে প্রবেশ করতে দেরি হচ্ছে, অনেকের আবার তথ্য মিলছে না বলে দ্রুত টিকা দেওয়া যাচ্ছে না। এজন্য তারা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। সমস্যা সমাধান হলে মঙ্গলবার ৫০০ জন ও বুধবার ৫০০ জন নারী-পুরুষকে টিকা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রতি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৫০০ জন করে দুদিনে এক হাজার জনকে টিকা দেওয়া হবে। যারা এরই মধ্যে ডিএনসিসি এলাকার যেকোনো হাসপাতালে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন তবে এখনো এসএমএস পাননি তারাও এ কার্যক্রমের আওতায় টিকা নিতে পারবেন।