সিলেটের কানাইঘাটে প্রবাসে থাকা দুই সন্তানের কাছে চাঁদা চেয়ে মাকে যৌন হেনস্তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে চারজনের নামে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ওই নারী বাদী হয়ে ধর্ষণচেষ্টা ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলাটি করেন। কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম মামলার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ওসি তাজুল ইসলাম জানান, মামলা করার আগে ভিডিওটি দেখে ভিডিও ধারণকারী চারজনকে শনাক্ত করা হয়। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, কানাইঘাট উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের এক প্রবাসী পরিবারের এক নারীকে গত ২৮ আগস্ট রাতে যৌন হেনস্তা করে ভিডিও ধারণ করেন পূর্বপরিচিত চারজন। তাঁরা ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই নারীর প্রবাসী ছেলের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে পরিবারটি এক লাখ টাকা দেয় গ্রামের পঞ্চায়েত কমিটির কাছে। এ নিয়ে ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। গতকাল সন্ধ্যার দিকে কানাইঘাট থানার পুলিশ ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশ পাঠিয়ে ভিডিও ধারণকারী চারজনকে শনাক্ত করে।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, গ্রামে পুলিশ পৌঁছার আগেই ওই চারজন পালিয়ে যান। এরপর পুলিশ হেনস্তার শিকার নারীকে থানায় নিয়ে তাঁর বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে। আজ সকালে ওই নারী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, ওই নারীর বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। তাঁর স্বামী নেই। চার মেয়ে ও দুই ছেলে। চার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, দুই ছেলে প্রবাসী। বাড়িতে ওই নারী একাই থাকেন। গত ২৯ আগস্ট বাড়িটি তালাবদ্ধ করে তিনি প্রতিবেশী কাউকে কিছু না জানিয়ে তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান। হঠাৎ বাবার বাড়িতে যাওয়ার কারণ জানতে গিয়ে আত্মীয়রা ওই নারীর মুখে ঘটনাটি শোনেন। এরপর প্রবাস থেকে তাঁর দুই ছেলে তাঁদের জানিয়েছেন, ভিডিওটি তাঁদের কাছে পাঠিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর ও সবশেষ গত শনিবার আপস নিষ্পত্তি করতে গ্রামের পঞ্চায়েত নিয়ে একটি বৈঠক হয়।ওই নারীর এক আত্মীয়ের দাবি, ওই বৈঠকে ভিডিও ধারণকারীদের চার লাখ টাকা দেওয়ার ফয়সালা করে অগ্রিম এক লাখ টাকা দেওয়া হয়। এর পরপরই ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার খবর পান তাঁরা।