আরামদায়ক, ব্যয় সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব, আধুনিক, টেকসই এবং নিরাপদ নগর পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে গাজীপুর-টঙ্গী-উত্তরা-বিমানবন্দর করিডোরে ২০ কিলোমিটার বিআরটি (বাস র্যাপিড ট্রানজিট) লাইন নির্মাণের কাজ। এই রুটে চলাচলের জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে কেনা হবে ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাস। এসব গাড়ি কখনো মাটি ঘেঁষে আবারও কখনো এলিভেটেড সড়কে চলাচল করবে। এ র্যাপিড ট্রানজিট চালু হলে দুর্ভোগের ঢাকা-গাজীপুর সড়ক মাত্র ৪০ মিনিটেই পাড়ি দেওয়া যাবে। আর এ রুটে বাস মিলবে দেড় থেকে তিন মিনিট পরপর।
২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালের জুন মাসে শেষ হবে হবে। চার হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা (এএফডি) ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) অর্থায়ন করছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ মেগা প্রকল্পের আওতায় সড়ক হবে ২০ দশমিক ২০ কিলোমিটার, এর মধ্যে ভূমিতে থাকবে ১৫ দশমিক ০৭ কিলোমিটার এবং উড়াল সড়ক হবে সাড়ে চার কিলোমিটার; যা নির্মাণের অগ্রগতি ৫০ দশমিক ৯০ শতাংশ। এছাড়া টঙ্গীতে ১০ লেন ব্রিজ তৈরি হচ্ছে, এটার অগ্রগতি ৬০ দশমিক ৭০ শতাংশ। নির্মিত হচ্ছে ছয়টি আধুনিক ফ্লাইওভার, যেগুলোর মোট দৈর্ঘ্য দুই হাজার ৮১২ দশমিক ৫০ মিটার। এর মধ্যে বিমানবন্দর ফ্লাইওভার ৮১৫ মিটার, জসিমউদ্দিন ফ্লাইওভার ৫৮০ মিটার, কুনিয়া ফ্লাইওভার ৫৫০ মিটার, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি ফ্লাইওভার ৫৫০ মিটার, ভোগড়া ফ্লাইওভার ৫৮০ মিটার ও জয়দেবপুর ফ্লাইওভার ২ হাজার ১৪ মিটার। এ ছয় ফ্লাইওভার নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৭৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। থাকছে গাজীপুরে একটি বাস ডিপো, যার কাজ শতভাগ সম্পন্ন। রুটে মোট স্টেশন ২৫টি থাকছে। থাকছে ৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ১১৩টি অ্যাকসেস রোড। প্রকল্পের আওতায় ২৪ কিলোমিটার হাইক্যাপাসিটি ড্রেন নির্মাণ কাজ চলমান, অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ১০ শতাংশ। কেনা হবে ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাস। রুট জুড়ে মোড়গুলিতে ট্রাফিক লাইট এবং ১৫০টি ক্লোজড-সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) কাজএ প্রকল্পের আওতায় তুরাগ নদীর ওপর ১০ লেনবিশিষ্ট টঙ্গী ব্রিজ এবং ছয়টি এলিভেটেড স্টেশনসহ সাড়ে ৪.৫ কিলোমিটার এলিভেটেড সেকশন নির্মাণ করছে বিবিএ। এছাড়া বিআরটি লেন, মিক্সড ট্রাফিক লেন, এনএমটি লেন, ফুটপাত এবং ড্রেনেজসহ সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ করিডোরের পেভমেন্ট উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ কাজও চালাচ্ছে তারা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে দাবি বিবিএর।