হবিগঞ্জ শহরের আনাচে কানাচে গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল। এদের একটি সংঘবদ্ধ দালালচক্র রয়েছে। যারা গ্রামগঞ্জ থেকে সদর হাসপাতালে রোগী এলেই তাদেরকে কৌশলে এসব ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। বিনিময়ে দালালচক্র মোটা অংকের টাকা কমিশন পেয়ে থাকে। এদেরকে সহায়তা করছে হাসপাতালের কিছু অসাধু কর্মচারীরা।
ইতিমধ্যে সারা বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন স্থানে অপচিকিৎসায় নবজাতক ও মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলছে।কিন্তু এর পরও তাদের লাগাম টানা যাচ্ছে না। যদিও কিছু হাসপাতালে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে জেল জরিমানা করে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই পুনরায় চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে এসব হাসপাতালের মালিকরা।
গতকাল বুধবার ১০ নভেম্বর শহরের নতুন বাস টার্মিনাল সংলগ্ন দি জাপান ক্লিনিকে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা ক্লিনিকে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। তাদের হামলায় নার্সসহ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, বাহুবল উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামের কুতুব উদ্দিনের স্ত্রী প্রসব ব্যথা নিয়ে গত দুদিন আগে একজনের মাধ্যমে দি জাপান কিনিকে ভর্তি হন। ওই রাতেই সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়। কিন্তু গতকাল শিশুটির শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর পরপরই শিশুটির অবস্থায় খারাপ হলে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে রাস্তায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
এ সংবাদ শুনে পরিবারের লোকজন উত্তেজিত হয়ে দি জাপান ক্লিনিকে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এ সময় নার্সসহ উভয় পক্ষের ৪/৫ জন আহত হয়। শিশুটির পরিবারের লোকজনের দাবী, নবজাতক শিশুটিকে ভুল চিকিৎসা করার সাথে সাথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এ সময় আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোথায় নেওয়ার কথা বললে আমাদের কাছ থেকে জোরপুর্বক একটি অঙ্গিকার নামায় স্বাক্ষর রাখার চেষ্টা করে। এতে অনিহা প্রকাশ করলে আমাদের উপর হামলা চালানো হয়। আমরা নিরুপায় হয়ে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হই। এর মধ্যেই শিশুর নড়াচাড়া বন্ধ হয়ে যায়। তারপরই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানান।
এ বিষয়ে দি জাপান কিনিকের পরিচালক ডাঃ আরিফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিশুটির শ্বাসকষ্টে মারা গেছে। এর পর তাদের স্বজনরা স্থানীয় কিছু লোকজন আমার ক্লিনিকে হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে নার্সসহ ৩/৪ জনকে আহত করে। এ সংবাদ শুনে হবিগঞ্জ সদর থানার এস আই সুহেলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগেও ওই ক্লিনিকে বানিয়াচংয়ের এক নারীর ডিএনসিসি করলে তার নবজাতক মারা যায়। এ সময় ক্লিনিকের মালিক আরিফের বিরুদ্ধে রোগীর স্বজনদের সাথে দুব্যবহার করেন। সরকারি তালিকা অনুযায়ী হবিগঞ্জ শহরে প্রায় অর্ধশতাধিক ক্লিনিক আছে। কিন্তু সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শতাধিকের বেশি ক্লিনিক।